২৯শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ / ১৪ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ / ১৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি / রাত ৯:০১

প্রস্তুত ৭৩ হাজার গবাদিপশু

প্রতি বছরের ন্যায় এবারও মানিকগঞ্জের খামারিরা উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে আসন্ন কোরবানি ঈদের জন্য ১০ হাজার খামারে প্রায় ৭৩ হাজার গরু, ছাগল, মহিষ, ভেড়াসহ অন্যান্য পশু প্রস্তুত করেছেন। এর মধ্যে প্রায় ৩৫ হাজারের মত জেলায় চাহিদা রয়েছে এবং তা পূরণ করে বাকি পশু রাজধানীসহ অন্যান্য জেলায় বিক্রি করা হবে। জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম সাংবাদিকদের এমন তথ্য নিশ্চিত করেন।

সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা যায় কিছু খামারি বাড়িতেই কোরবানির পশুর যত্ন নিতে ব্যস্ত। এছাড়াও জেলায় বেশ কয়েকটি বড় আকারের গরুর খামারও রয়েছে।

এদের মধ্যে সদর উপজেলার বেতিলা-মিতলা ইউনিয়নের মকিমপুর গ্রামে ‘আল-বাকারা এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্ম’ এবং সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়নের বিজরী চকে ‘গ্রামবাংলা ডেইরি ফার্ম’ অন্যতম। 
এসময় আল-বাকারা এগ্রো এন্ড ডেইরি ফার্মের ম্যানেজার মনোয়ার হোসাইন মিয়া বলেন, বর্তমানে আমাদের এখানে ১৩৪টি গরু আছে যার মধ্যে ২০টি এবার কোরবানির জন্য প্রস্তুত করেছি। 

গরু মোটা-তাঁজা করার জন্য ওষুধ ব্যবহার না করে বিভিন্ন ধরনের ঘাস খাওয়ানো হয়। আমাদের এখানে মূলত ৫ প্রকার জাতের গরু আছে যা দেশি, সাহিয়াল, ঘীড়, জার্সিম, হলস্টিন ফ্রিজিয়ান। এবছর প্রতি কেজি ৫০০-৫৫০ টাকা দরে গরু বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

এরপর কথা হয় গ্রাম বাংলা ডেইরি ফার্মের মালিক মোহাম্মদ সোনা মিয়ার সাথে। বর্তমানে কোরবানির জন্য তার ফার্মে ২৫টি ষাড়গরু ও ১৯ টি মহিষ আছে। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক ভাবে পশুগুলোকে মোটা-তাঁজা করতে সময় মতো দেশীয় খাদ্যের মাধ্যমে যত্ন নেওয়া হচ্ছে। তার ফার্মে ফ্রিজিয়ান, অস্ট্রেলিয়া, সাহিয়াল, দেশীয়সহ মোট ৪ প্রকার জাতের গরু রয়েছে। এ বছর তিনি গরু ও মহিষ একই দামে ৫০০ টাকা কেজি দরের বেশি বিক্রের আশা রাখেন।

এছাড়াও তার ফার্মে একটি লাল রঙের ৩০ মন ওজনের একটি দেশীয় গরু আছে যার দাম ৮-৯ লক্ষ টাকায় বিক্রয় করবেন বলে জানান তিনি।

এসময় বেশ কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা বললে তারা জানান, কোরবানির পশু মোটা-সোটা করতে দিন-রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন তারা। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের  নিয়ম-নীতি অনুসরণ করেই সঠিক ভাবে পশুর খাদ্য, পরিবেশ সহ প্রাকৃতিক ভাবেই মোটা-তাঁজার প্রস্তুতি চলছে।তবে কোরবানিতে বিদেশী পশু আমদানি না করার আহ্বান জানিয়েছেন জেলার খামারিরা।

এবিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. মাহবুবুল ইসলাম বলেন, আমরা খামারিদের সার্বিক সহযোগিতা করে যাচ্ছি।বিশেষ করে গবাদিপশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করণে ভ্যাকসিনেশন, ক্রিমিনাশক ওষুধ, ভিটামিন সহ বিভিন্ন ধরনের উপকরণ তাদের দেওয়া হয়েছে।এছাড়াও খামারিদের কোন অসুবিধা থাকলে সেখানে ডাক্তার পাঠানো হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আশা করি এ বছরে খামারিরা তাদের চাহিদা মোতাবেক দাম পাবে।যেহেতু বাংলাদেশের উৎপাদিত পশু দিয়েই আমরা কোরবানি দিতে পেরেছি।অতএব,দেশের বাহিরে থেকে পশু আসার সুযোগ নেই।এবং গাবতলির হাট পাশে হওয়াতে খামারিরা ন্যায্য মূল্য পাবে এবং লাভবান হবে।