১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি / বিকাল ৫:০২

খুদে লেখক থেকে স্বপ্নমঙ্গলের প্রত্যয়ে

লেখকের বইয়ের ভুবন

বল্টু বিল্টু যমজ ভাই। তবে চেহারা একরকম নয়। একজন স্বাস্থ্যবান তো অন্যজন পাতলা। বিল্টু শান্ত। বল্টু দুষ্টু। বল্টু গুলতি ছোড়ায় দক্ষ। তাদের দাদু প্রায় পাগল, ঘরে বন্দি থাকেন। সেই ঘরে একটা পুরনো দিনের দেয়াল ঘড়ি আছে। অনেক দামি ঘড়ি। নিলামে কেনা কোনো এক রাজার ঘড়ি।
দাদু সব সময় বলতে থাকেন, ঘড়ির সাথে ধ্বংস হবে পৃথিবী। বাড়ির সবার মায়া জড়ানো এই ঘড়িতে। তো একদিন হলো কি-
ছলচাতুরি করে ঘড়িটা নিয়ে যায় হাবু ডাকাত। সাথে অপহরণ করে বল্টু বিল্টুকেও। বল্টু বিল্টুর প্রশংসা আছে বাড়িসহ সারা গ্রামে। শুরু হয় রহস্য। শুরু হয় বুদ্ধিদীপ্ত দুই বালকের এডভেঞ্চার। দাদুর দেয়াল ঘড়ি উদ্ধার অভিযানের টানটান মিশন নিয়েই অলীন বাসার’র নতুন এই উপন্যাস- বল্টুদের দেয়াল ঘড়ি…

বল্টু বিল্টুর বুদ্ধি কি দাদুর ঘড়ি উদ্ধারে কাজে আসবে? ওরা কি পারবে নিজের জীবন বাঁচাতে?

জানতে হলে আসতে হবে বইমেলার বিশ্ব সাহিত্য ভবনের স্টলে। কিনতে হবে বইটি। উপন্যানসটি বিশ^ সাহিত্য ভবন থেকে বেরিয়েছে। নিপুনতায় প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ। অলংকরণে শেহরীন আহমেদ ইরিনা। বইটির মূল্য রাখা হয়েছে তিনশত টাকা।

বল্টুদের দেয়াল ঘড়ি উপন্যাসে লেখক পাঠককে গল্পে ধরে রাখার চেষ্টা করেছেন। লেখকের অন্যান্য গল্পের ধারা থেকে উপন্যাসটি একটু ভিন্ন। একেকটি বই একেক রকমের। আর কারণেই অলীন বাসরের বই মানেই বইমেলার বিশেষ চমক। লেখক একুশে বইমেলার একজন নিয়মিত লেখক। খুব ছোটবেলা থেকেই লেখার হাতেখড়ি। বাবা সাংবাদিক রফিকুল বাসার ও মা নাজনিন আক্তারের অদম্য অনুপ্রেরণায় বেড়ে ওঠা অলীন বাসার সেই ক্ষুদে লেখক থেকে আজ মস্ত লেখক। তবে বইমেলার ইতিহাসে অলীন বাসার খুদে লেখক হিসেবেই খুব জনপ্রিয়। ২০১৫ সালে সবচেয়ে কম বয়সে বই লিখে অলীন বাসার খুদে লেখকের খেতাবে ভূষিত হয়। এত ছোটবেলার কথা তখন লেখক মাত্র প্রথম শ্রেণিতে পড়ুয়া। বয়স মাত্র ছিল সাত বছর। গল্প লেখা শুরু হয় আরও একবছর আগে থেকে। বইয়ের তালিকাও বেড়েছে লেখকের। এ পর্যন্ত প্রকাশিত বই ১৩ টি। লেখক অলীন বাসারের জন্ম ২০০৮ সালের ২২ মে, সাতক্ষীরায়। বর্তমানে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির ছাত্র। ধীরে ধীরে লেখক খুদে থেকে বড় হয়ে উঠছে। অলীন বাসারের প্রথম উপন্যাস ছিল ‘নীল রত্নের রাজ্যে মিনু’ গত বছর বইমেলায় প্রকাশিত। ‘বল্টুদের দেয়াল ঘড়ি’ দ্বিতীয় উপন্যাস। লেখকের অন্যান্য লেখা সব গল্প সংকলন। অন্ধকারে ভূতের ছায়া (সাঁকোবাড়ি-২০১৫), ভুতুড়ে ( সাঁকোবাড়ি-২০১৬), ভুতুম (সাঁকোবাড়ি-২০১৭), ভূতের টিউশনি (জ্ঞান বিতান-২০১৮),পালোয়ানের হার (ঘাসফড়িং-২০১৮), গোরস্তানে বিয়ে ( সাম্প্রতিক-২০১৯), বিড়াল পণ্ডিত (ঘাসফড়িং-২০১৯), বাঘের গর্জন ( ঘাসফড়িং-২০২০), কালো ঘোড়া (পাঞ্জেরি-২০২০), পেটুক শিয়াল (ঘাসফড়িং-২০২১), চক্র (পালক-২০২২) বইগুলো অলীন বাসারের পাঠক সমাদৃত গল্প সংকলন। অপ্রকাশিত আরও শত শত গল্প এখনও অপ্রকাশিত আছে। পাশাপাশি চলছে নতুন একটি গোয়েন্দা সিরিজ লেখার কাজ। এই সিরিজের ১৬ টা বই ইতিমধ্যে লেখাও শেষ। স্কুলের পড়ালেখার পাশাপাশি সাহিত্য নিয়ে কাজ করাটা অনেক বেশি কষ্টসাধ্য। তবু লেখতে ভালোবাসে বলেই বিনাক্লান্তিতে অলীন বাসারকে লিখে যেতে হয়। লেখকের অবসর কাটে নিজের লেখা লেখে আর দেশ বিদেশের বিভিন্ন লেখকের বই পড়ে। ঝুলিতে আছে প্রশিক্ষণ সনদ। প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ এর ২ দিনব্যাপী সাংবাদিকতা বিষয়ক প্রমিক্ষণ ও রয়টার্স এর ডিজিটাল জার্নালিজম (অনলাইন) কোর্স শেষ করেছে। ভবিষ্যতে আরও অনেক ভাল কিছু লেখার প্রত্যশায় পাঠকের ভালবাসায় এভাবেই এগিয়ে যেতে চায় অলীন বাসার।

মারুফ আহমেদ, বিশেষ প্রতিনিধি