২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ১২ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ১৬ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি / সকাল ১০:২১

বরিশালে পরকীয়া প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে ফুটবলারের আত্মহত্যা

বরিশালে পরকীয়া প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে ফুটবলারের আত্মহত্যা

মাসুমা জাহান,বরিশাল ব্যুরো:

বরিশালে পরকীয়া প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যা করেছেন ঢাকার সাইফ স্পোটিং ক্লাবের অনুর্ধ্ব ১৭ দলের গোলরক্ষক সোহেল জমাদ্দার (২৩)।বরিশালের শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামের নির্মাণাধীন ড্রেসিংরুমে গলায় ফাঁস নিয়েছেন এ ফুটবলার।

স্বজনরা জানান,শনিবার (৬ মে) গভীর রাতে ইমোতে পরকীয়া প্রেমিকাকে প্রথমে আত্মহত্যার সরঞ্জমাদির ছবি পাঠান তিনি। পরে তাকে ভিডিও কলে রেখে সোহেল ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন।রোববার (৭ মে) সকালে সাড়ে ১০টার দিকে ওই ফুটবলারের মরদেহ উদ্ধার করেছে বরিশাল থানা পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন।

আত্মহননকারী মো. সোহেল জমাদ্দার ঝালকাঠি জেলার নলছিটি উপজেলার রায়াপুর বটতলা এলাকার হাফিজ জমাদ্দারের ছেলে।এই ফুটবলার বিবাহিত ও তার আট মাস বয়সী এক ছেলে সন্তান রয়েছে।

প্রেমিকাকে ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যার আলামত পাওয়া গেছে বলে নিশ্চিত করেছেন মরদেহ উদ্ধারে যাওয়া কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) শহীদুল ইসলাম।

তিনি সাংবাদিকদের বলেন,প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন এই ফুটবলার।ফাঁস নেওয়ার পর দড়ি ছিড়ে নিচে পড়ে যাওয়ায় তার মাথা ফেটে গেছে।ভিডিও কলে রেখে আত্মহত্যার আলামত পাওয়া গেছে। আত্মহত্যার আগে পাঠানো ছবিও পাওয়া গেছে।তার মোবাইল ফোন আলমত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে।

ফুটবলারের বোন শান্তা জানান,বিয়ের আগে বরিশাল নগরের বেসরকারি নার্সিং কলেজের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল সোহেলের।তাদের সম্পর্ক না টেকায় সোহেলকে অন্যত্র বিয়ে দেওয়া হয়।তবে সম্প্রতি পরিবারের সবার অজান্তে সেই মেয়ের সঙ্গে আবারও সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সোহেল।এ নিয়ে সংসারে অশান্তি দেখা দিলেও ওই মেয়ে আর সোহেলকে কোনো ভাবে ফেরানো যায়নি।

শান্তা বলেন,গতকাল শনিবার স্ত্রীর সঙ্গে সোহেল ভাইয়ের ঝগড়া হয়।ভাবী ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়ি চলে যান।এদিকে রোববার খেলা থাকায় শনিবার স্টেডিয়ামে আসেন সোহেল ভাই।সন্ধ্যার পর থেকে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। অন্যান্য খেলোয়াড়রা সোহেল ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি।আমিও যোগাযোগের চেষ্টা করে পাইনি।

সোহেলের পরকীয়া প্রেমিকা জানান,সোহেল ইমোতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে জানিয়ে দড়ি ও একটি মইয়ের ছবি পাঠায় আমাকে।রাতে তাকে ভিডিও কলে রেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে সে।সকালে এসে তার মরদেহের সন্ধান পাই।

সোহেলের সহ-খেলোয়ার মো. রায়হান বলেন, সাইফ স্পোটিং ক্লাবের অনুর্ধ্ব ১৭ দলে গোলরক্ষক হিসেবে দুই বছর খেলেছে সোহেল।সম্প্রতি বরিশালের বিভিন্ন দলে খেলত সে।সোহেল আউটার স্টেডিয়ামের জন্য নির্মানাধীন ড্রেসিংরুমের বাথরুমে ফ্যানের আংটার সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে।

এসআই শহীদুল ইসলাম বলেন,মরদেহের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।এ ঘটনায় আপাতত অপমৃত্যুর মামলা হবে।অভিযোগ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।