৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ / ২২শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ / ২৬শে শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি / দুপুর ১২:৫১

মুন্সিগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদকের স্বেচ্ছাচারিতায় ব্যাহত হচ্ছে কার্যক্রমঃ

মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি- বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)’র অন্যতম অঙ্গ সংগঠন হচ্ছে স্বেচ্ছাসেবক দল। সংগঠনটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে মুন্সিগঞ্জের কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মুন্সিগঞ্জের তথা দেশ সেরা বিদ্যালয়ের ছাত্র নেতারা, মুন্সিগঞ্জের হরগংঙ্গা বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচিত ভিপি ও মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম ভিপি মাসুম ছিলেন আহবায়ক ও যুগ্ম আহবায়ক এর দায়িত্বে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্র নেতা গোলাম গাউছ এর পরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেন শ্রীনগর কলেজ ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল ও সাবেক ভিপি ও মুন্সিগঞ্জ জেলা ছাত্র দলের সাবেক নেতা ইদ্রিস মিয়াজি ভিপি মহন যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হন। উজ্জ্বল – মহন কমিটিতে থাকার সময় কেন্দ্রীয় সকল কর্মসূচীতে শতশত নেতা-কর্মী অংশ গ্রহন করতেন, ইহা ছাড়াও স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি মুন্সিগঞ্জ জেলার ৬টি উপজেলা, ২ টি পৌরসভাসহ ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি গঠন করা ছিল এবং আন্দোলন সংগ্রামে মুন্সিগঞ্জের এক নাম্বার সংগঠনে পরিনত হয়েছিল। সভাপতি আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ঢাকা বিভাগীয় সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক মনোনীত হলে এবং পরবর্তী কমিটিতে এক নেতার এক পদ বাস্তবায়ন এর সুযোগে ২০১৮ সালের জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে এক মৌসুমি নেতার বিশেষ সুপারিশে সাধারণ সম্পাদক ইদ্রিস মিয়াজি ভিপি মহনকে সভাপতি ও সিদ্দিক মোল্লাকে সাধারণ সম্পাদক করে সাত সদস্য বিশিষ্ট আংশিক কমিটি অনুমোদন করেন কেন্দ্রীয় কমিটি। প্রথিতযশা ছাত্র নেতা দিয়ে পূর্বে কমিটি গঠিত হলেও বিশেষ সুপারিশ এর মাধ্যমে জেলার নেতৃত্বে আছেন সিক্স পাশ সম্পাদক। দক্ষতা ও যোগ্যতার অভাব হারে হারে টের পাচ্ছে মুন্সিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতৃবৃন্দ।

গত ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল মনোনয়ন দেন একসময়ের তুখোড় ছাত্র নেতা, ভাষা সৈনিক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠনক, সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেনকে, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে সিদ্দিক মোল্লা তার পছন্দের ব্যাক্তির মনোনয়ন না পাওয়ায় ঐ ব্যাক্তির গার্মেন্ট এর শতশত কর্মী নিয়ে দলীয় সিদ্ধান্তকে বৃদ্ধাআংগুলি দেখিয়ে সিরাজদিখানের নিমতলিতে ঢাকা- মাওয়া মহাসড়ক অবরোধ করে ঝাড়ু মিছিল করেন এবং দলীয় প্রার্থী নির্বাচণী প্রচারনায় গেলে আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের সাথে নিয়ে বাঁধা সৃষ্টি করেন এবং শাহ্ মোয়াজ্জেম হোসেন এর গাড়িসহ তার বহরে থাকা গাড়ি ভাংচুর করান, গত ১ সেপ্টেম্বর ২০২১ সেই ব্যাবসায়ীর আরেকটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরী উদ্ভোধন করে সাভার এলাকার সংসদ সদস্য ও আওয়ামীলীগ সরকারের মন্ত্রী সাহেব, সেই অনূষ্ঠানেও সিদ্দিক মোল্লা শ্রীনগর- সিরাজদিখানের তার অনুগত কর্মীদের পদ-পদবী দেওয়ার লোভ দেখিয়ে নিয়ে যান।

বর্তমানে মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিভিন্ন উপজেলা বিশেষ করে সিরাজদিখান, শ্রীনগর, লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলা কমিটিতে তার বলয় তৈরি করতে নিজের অনুগত লোক দিয়ে কমিটি করার পায়তারা চালিয়ে যাচ্ছেন। জেলা কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার সময় দেখা গেছে এমন লোককে তিনি পদায়ন করেছেন যারা কোনদিন ইউনিয়ন তো দূরের কথা ওয়ার্ড কমিটির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মোল্লা সম্পর্কে তার এলাকার এক ঘনিষ্ঠ নেতা বলেন- ”সিদ্দিক মোল্লা ভাই গর্ব করে বলেন আমি তো টাকা খরচ করে কমিটিতে এসেছি, আমার খরচ উঠাতে হবেনা”

সিরাজদিখান উপজেলা ও শ্রীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি নিয়েও তিনি নানান বাহানা শুরু করেছেন।

সিরাজদিখান উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক প্রার্থী মুন্সিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সুপার সেভেনে থাকা যুগ্ম সম্পাদক, সিরাজদিখান উপজেলা ছাত্র দলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মুস্তাফিজুর রহমান রিপন বলেন, আমি সিদ্দিক মোল্লার চাহিদা পূরণ না করতে পারায়, এত আন্দোলন সংগ্রাম করেও তার মন জয় করতে পারি নাই, তাই তিনি আমার নাম সুপারিশ করে নাই।

শ্রীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতেও একই সমস্যা সৃষ্টি করেছেন বিদেশ থেকে আসা এক প্রবাসী তার চাহিদা পূরণ করতে পারায় তাকে মুন্সিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটিতে নিজের কোটায় করেছেন সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক এবং তিনি তাকে এতটাই সন্তুষ্ট করেছেন যে তার যোগ্যতা,দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা না থাকলেও শুধুমাত্র অনুগত এই যোগ্যতাই তাকে শ্রীনগর উপজেলা কমিটির আহবায়ক বানানোর জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

বিভাগীয় টিমের কাছে অনৈতিক আবদার করে ব্যর্থ হওয়ায়, বিভাগীয় টিমকেই কলংকিত করতে নানান পায়তারা চালাচ্ছেন মুন্সিগঞ্জ জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিক মোল্লা। তারই অংশ হিসেবে জনৈক দিপু খান নামে কুকুটিয়া ইউনিয়নের স্বঘোষিত স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক হিসেবে দাবিদারকে দিয়ে শ্রীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের তিন প্রার্থীকে নিয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে একটি আবেদন করান কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সভাপতি / সাধারণ সম্পাদক বরাবরে। সেটি তদন্তের জন্য ঢাকা বিভাগীয় টিমের প্রধান কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি আবুল কালামকে দায়িত্ব দিলে জনৈক দিপু খান তাকে ফোনে বলেন আমি এই আবেদন করিনি, আমার নামে কে বা কাহারা করছে আমি তা জানি না, তারপর জনৈক দিপু খান তার স্ত্রী ও প্রতিবেশীদের উপস্থিতিতে আরেকটি আবেদনে স্বাক্ষর করেন যে তিনি এটা করেন নাই।

অনুসন্ধানে জানা যায় কুকুটিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের স্বঘোষিত আহবায়ক সমিউর রহমান খাঁন দিপু (দিপু খান) নামে কুকুটিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলে কেউ নেই। তার কমিটি সম্পর্কে শ্রীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক নুরুল ইসলাম পার্থকে ফোন করে না পেয়ে সদস্য সচিব কামরুল ইসলাম মন্টুকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন- কুকুটিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি যখন কাজী শামীম ইমাম সাচ্চু সভাপতি ও নুরুল ইসলাম পার্থ সাধারণ সম্পাদক তখন কুদ্দুস শেখ সভাপতি ও আশরাফুল মল্লিককে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি অনুমোদন করেন, সেই থেকে আমাদের সকল কর্মকান্ডে, আন্দোলন, সংগ্রামে কুদ্দুস – আশরাফুলের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা অংশ গ্রহন করে বিধায় কুকুটিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের কমিটি মেয়াদ উর্ত্তীর্ণ হলে পার্থ আহবায়ক আর আমি সদস্য সচিব নির্বাচিত হওয়ার পরেও কুদ্দুস – আশরাফুল কমিটি পুনরায় অনুমোদন করি, আমার জানা মতে অন্য কোন কমিটি নেই আর ওরা তো সক্রিয়।

আব্দুল কুদ্দুস শেখ বলেন আমি সভাপতি ও আশরাফুল মল্লিক সাধারণ সম্পাদক আমরাই আছি, সকল আন্দোলন -সংগ্রামে। দিপু খান নামে আমাদের কুকুটিয়া ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলে কেউ নেই, আমাদের জানা মতে দিপু খান নামে একটি ছেলে আছে সে তো আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত, সে যে কিছুদিন আগে কুকুটিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন তার একটি ভিডিও আমরা আমাদের সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ সহ বিভাগীয় টিমের কাছে পৌঁছে দিয়েছি।